Charles Best একবার তাঁর এক চিঠিতে লিখেছিলেন যে "আমার পিএইচডি থিসিসের কাজটা বোধ হয় অবিস্বরণীয় হয়ে রইলো. .." তা কেবল এজন্য নয় যে তিনি, Frederick Banting আর James Collip এর সঙ্গে মিলে চিকিৎসাশাস্ত্রে প্রথম ইনসুলিনের প্রথম সফল প্রয়োগ করেন, বরং তাঁর "PhD পেপারটা John Bersford Leathes এর মতন একজন খুঁটিয়ে পড়েছেন" বলে ।
১৯২০ র দিকে বিজ্ঞানীরা জীবকোষ পর্দার গঠন নিয়ে প্রথম ব্যাখ্যা দেন । তারপর বিভিন্ন পর্যায়ে, সময়ের মধ্যে দিয়ে, বিভিন্ন মতবাদ যুক্ত-বিযুক্ত হয়ে জীবকোষ পর্দার গঠনের যে চিত্রটা আমরা "মিত্র-চৌধুরী-সাঁতরা " বা "স্যান্যাল-চট্টোপাধ্যায়" বইতে পাই সেটা ১৯৭২ এর দিকে Jonathan Singer এবং Garth Nicolson এর দেওয়া । সে মতবাদ অনুযায়ী কোষপর্দা একটা নমনীয় আকৃতি, যার দুধারে লিপিড অণুগুলি সুষমভাবে বিন্যস্ত থাকে, তাতে সাঁতার কেটে বেড়ায় অসংখ্য প্রোটিন। সুদীর্ঘ পঁচিশ বছর ওই মতবাদ কে অবিশ্বাস করার অবকাশ ছিল না, কারণ এই ধারণা টি Nigel Unwin এবং Richard Henderson এর ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপিতে তোলা ছবির ওপর সুপ্রথিষ্ঠিত ছিল । Singer এবং Nicolson র মতবাদ মতবাদ অনুযায়ী কোষপর্দা নমনীয় এবং তার গঠন সর্বত্র সমান।
ওই ধারণায় প্রথম ধাক্কা লাগে একটি অতি সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমে । পরীক্ষাটিতে কোষপর্দার লিপিড সমুদ্রে কিছু বিশেষ লিপিড ছেড়ে দেওয়া হয় যার বিশেষত্ব হলো বাকি লিপিডগুলোর থেকে ওগুলো আলাদা করে চেনা যাবে । লক্ষ করে দেখা গেল, বিশেষ লিপিডগুলো কোষপর্দার কিছু কিছু জায়গায় জটলা বেঁধে থাকে, সেখানে ওদের নড়াচড়াও বেশ কমে যায় । পরীক্ষাটি করেন, Erich Sackmann, আর তাতে "ঘৃতাহুতি" পরে Morris Karnovsky আর Richard Klausner এর যুগ্ম পরীক্ষা থেকে । Morris Karnovsky কোষপর্দার ওই জটলা বাঁধা জায়গাগুলোর একটা নাম রাখেন "lipid microdomain". পরে Kai Simons এবং Gerrit ven Meer, "lipid microdomain" বিশ্লেষন করে দেখান লিপিডগুলোর ওই বিশেষ দশার জন্য দায়ী পদার্থটি আমাদের প্রোথিত দশার নায়ক "কোলেস্টেরল"।
John Bersford Leathes তখন ইংল্যান্ডের শেফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল কাউন্সিলের হর্তাকর্তা । দু দুটো হাসপাতালের গবেষণাগারের দায়িত্ব তাঁর ওপর। শারীরবিজ্ঞানের প্রশিক্ষিত হলেও চোখের অসুবিধের কারণে প্র্যাকটিস করতে পারেন নি । শুরু করেন গবেষণা, যা মূলতঃ চিকিৎসাশাস্ত্র বা বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় পক্রিয়া বিষয়ক - যেমন "DNA গঠনকারী অণু আমাদের দেহে কি ভাবে তৈরী আর নষ্ট হয়", "ক্ষুদ্রান্তে কিভাবে খাবারের শোষণ হয়" ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। পরের দিকে চিকিৎসাশাস্ত্রে রসায়নবিজ্ঞানের প্রয়োগের দিকে আকৃষ্ট হন আর সে গবেষণার মূল বিষয়বস্তু ছিল স্নেহ পদার্থ (ফ্যাট বডি) । তখন কে জানতো, যে তাঁর পর্যবেক্ষন কোষপর্দার গঠনের এক নতুন ধারণার সূত্রপাত করবে । আর সেটা বুঝে ব্যাখ্যা করতে আরো ষাট বছর লেগে যাবে ।
১৯২৫ সালে চিকিৎসা শাস্ত্রের একটি নামকরা পত্রিকা "Lancet" এ "Role of Fats in Vital Phenomena" শীর্ষক তাঁর একটি লেখা বেরোয় ।সে লেখার সারাংশ করলে দাঁড়ায় যে, লিপিড কেবল জলীয় মাধ্যম কে অপছন্দ করে তা নয়, বিভিন্ন ধরণের লিপিডের পরস্পরের মধ্যেও ছুৎমার্গ আছে । যেমন, শুধু ফসফটিডিল কলিন (PC) আর ফসফটিডিল কলিন/কোলেস্টেরোলের (PC-C) মিশ্রনের ধরণ-ধারণ পরস্পরের থেকে আলাদা । PC-C গুটিসুটি মেরে কম জায়গা নেয়, যেখানে একই পরিমান PC ওর থেকে বেশি জায়গা দখল করে থাকে। বলা বাহুল্য PC এই মগজ-ধোলাই এর জন্য দায়ী কোলেস্টেরল। একাএকা থেকে যে lequid-crystal এর মতন কিম্ভুত দশা দেখতে পারে সে সব করতে পারে (প্রোথিত দশা ১)! কিন্তু কেন ?
চলবে। ...
প্রাপ্তিস্বীকার : ইন্টারনেট
প্রাপ্তিস্বীকার : ইন্টারনেট
No comments:
Post a Comment